সোমবার, ডিসেম্বর ২২

রাজশাহী বিভাগীয় আন্তঃকলেজ ফুটবলের ফাইনালে নাটকীয় লড়াই

|| অপু দাস | জেলা প্রতিনিধি (রাজশাহী) ||

রাজশাহী বিভাগীয় আন্তঃকলেজ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচে উত্তেজনাপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বিতার পর চ্যাম্পিয়নের মুকুট জয় করেছে নাটোরের বিলচলন শহীদ শামসুজ্জোহা সরকারি কলেজ। গোলের লড়াই, লাল কার্ডের নাটক এবং ট্রাইবেকারের রোমাঞ্চে ম্যাচটি দর্শকদের জন্য হয়ে ওঠে স্মরণীয়।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজশাহী মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে বিলচলন শহীদ শামসুজ্জোহা সরকারি কলেজের মুখোমুখি হয় সিংড়া দমদমা পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজ। বিকেল ২টা ৪০ মিনিটে খেলা শুরু হলে শুরু থেকেই দুই দলের আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণে মাঠজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। গ্যালারিতে উপস্থিত দর্শকদের করতালিতে স্টেডিয়াম ছিল মুখর।

শুরুর দিকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল উপহার দেয় বিলচলন কলেজ। দ্রুতগতির আক্রমণের ফল হিসেবে প্রথমার্ধের সপ্তম মিনিটে ১৫ নম্বর জার্সিধারী আমানুল্লাহ গোল করে দলকে এগিয়ে নেন। এরপর ১৬ মিনিটে মাঠের উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে উভয় দলের একজন করে খেলোয়াড় লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। সিংড়া কলেজের রিফাত হোসেন ও বিলচলন কলেজের শুভ ম্যাচ থেকে বহিষ্কৃত হন।

১০ জনের দল নিয়েও চাপ ধরে রাখে বিলচলন শহীদ শামসুজ্জোহা সরকারি কলেজ। প্রথমার্ধের ২৭ মিনিটে ৪ নম্বর জার্সিধারী রাকিবুলের জোরালো শটে দ্বিতীয় গোল আসে। দুই গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় বিলচলন কলেজ।

দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে আক্রমণ বাড়ায় সিংড়া দমদমা পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজ। ৫৩ মিনিটে ১০ নম্বর জার্সিধারী ফাহাদ হোসেন একটি দৃষ্টিনন্দন গোল করে ব্যবধান কমান। পরে ৫৯ মিনিটে ১২ নম্বর জার্সিধারী আবদুল্লাহ বিন কাফি গোল করলে ম্যাচে সমতা ফেরে। নির্ধারিত সময় শেষে খেলা ২-২ গোলে শেষ হয়।

ফল নির্ধারণে ট্রাইবেকারে গড়ায় ম্যাচ। সেখানে অসাধারণ দক্ষতার পরিচয় দেন বিলচলন কলেজের গোলরক্ষক। গুরুত্বপূর্ণ একাধিক শট প্রতিহত করে তিনি দলকে জয়ের পথে নিয়ে যান। শেষ পর্যন্ত ট্রাইবেকারে জয় নিশ্চিত করে চ্যাম্পিয়নের শিরোপা নিজেদের করে নেয় বিলচলন শহীদ শামসুজ্জোহা সরকারি কলেজ।

রাজশাহী বিভাগীয় প্রশাসন ও জেলা ক্রীড়া অফিসের তত্ত্বাবধানে এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এই টুর্নামেন্টে রাজশাহী বিভাগের আট জেলার ১৬টি কলেজ দল অংশ নেয়। নকআউট পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতার প্রতিটি ম্যাচেই ছিল জমজমাট লড়াই।

ফাইনাল শেষে আয়োজিত পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ী ও রানার্সআপ দলের হাতে ট্রফি তুলে দেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান। তিনি তরুণদের খেলাধুলায় আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান। এ সময় জেলা প্রশাসন, ক্রীড়া পরিদপ্তর ও বিভিন্ন ক্রীড়া সংগঠনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ম্যাচে ধারাভাষ্যের দায়িত্ব পালন করেন আব্দুর রোকন মাসুম, আব্দুল হানিফ মিয়া, সিরাজী ফেরদৌস ও জাহিদুল ইসলাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *