
|| আন্তর্জাতিক ডেস্ক ||
পাকিস্তানের বর্তমান রাজনৈতিক উত্তেজনা নিরসনে কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর সঙ্গে আলোচনায় বসার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর, ২০২৫) ইসলামাবাদে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে তিনি এই প্রস্তাব দেন।
আলোচনার মূল শর্ত ও প্রেক্ষাপট
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ জানান, পিটিআই এবং তাদের মিত্ররা যদি সত্যিই আলোচনার বিষয়ে আন্তরিক হয়, তবে সরকারও সংলাপ শুরু করতে প্রস্তুত। তবে এই আলোচনার ক্ষেত্রে তিনি কিছু স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন:
- বৈধ বিষয় নিয়ে আলোচনা: সংলাপ শুধুমাত্র “বৈধ ও যুক্তিযুক্ত” বিষয়গুলোর ওপর ভিত্তি করে হতে হবে।
- ব্ল্যাকমেইলিং নয়: শাহবাজ শরিফ সতর্ক করে বলেছেন, আলোচনার নামে কোনো ধরনের “ব্ল্যাকমেইলিং” বা অন্যায্য চাপ সহ্য করা হবে না।
- জাতীয় ঐক্য: দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐক্য ও সমঝোতা জরুরি বলে তিনি মন্তব্য করেন।
কেন এই প্রস্তাব?
গত কয়েক দিনে পাকিস্তানে রাজনৈতিক তাপমাত্রা নতুন করে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে একটি দুর্নীতি মামলায় ইমরান খান এবং তার স্ত্রী বুশরা বিবির ১৭ বছরের কারাদণ্ড হওয়ার পর পিটিআই সমর্থকরা দেশজুড়ে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফেরাতে সরকার পক্ষ থেকে এই “অলিভ ব্রাঞ্চ” বা বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হলো।
পিটিআই-এর প্রতিক্রিয়া
পিটিআই-এর পক্ষ থেকে আলোচনার প্রস্তাবকে ইতিবাচকভাবে দেখা হলেও সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। পিটিআই নেতা আসাদ কায়সার ইতিপূর্বে জানিয়েছিলেন যে, একদিকে নেতাকর্মীদের ওপর দমন-পীড়ন চালানো হচ্ছে এবং অন্যদিকে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে—এই দুটি বিষয় একসঙ্গে চলতে পারে না।
বিশ্লেষণ: রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০২২ সালে ক্ষমতাচ্যুতির পর থেকে ইমরান খান ও শাহবাজ শরিফের সরকারের মধ্যে যে চরম বৈরিতা তৈরি হয়েছে, তা নিরসনে এই সংলাপের প্রস্তাব কতটা কার্যকর হয় তা দেখার বিষয়। তবে আলোচনার এই আহ্বান পাকিস্তানের ভঙ্গুর অর্থনীতি ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সূত্র: ডন নিউজ
