
|| আজিজুল হক | ভুরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি ||
কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের খামার বেলদহ গ্রামে জমি দখলের উদ্দেশ্যে রাতের অন্ধকারে পাকা ধান কেটে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনাটি ঘটে গত ২২ নভেম্বর ভোর রাত ৪টার দিকে।
ভুক্তভোগী পরিবার জানায় খামার বেলদহ গ্রামের মৃত সিতাব উদ্দিনের পুত্র মোঃ মজাহার আলীর স্ত্রী মোছাঃ জোবেদা বেগম ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত ৭ একর ৮ শতক জমি দীর্ঘদিন ধরে ভোগ দখল করে আসছেন। তবে একই গ্রামের লালপাড়া শেখের পুত্র মোঃ আফজাল হোসেন কবির, হাফিজুর রহমান টুরার পুত্র হারুন মিয়াসহ একটি প্রভাবশালী ভূমিদস্যু চক্র ওই জমি নিজেদের দাবি করে দখলের পাঁয়তারা চালিয়ে আসছিল।
জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধে আদালতে মামলা দায়ের করেন মজাহার আলী। মামলার পরও চার–পাঁচ মাস ধরে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল।
অভিযোগ আছে, প্রায় এক মাস আগে বিরোধীয় জমিতে ঘাসনাশক বিষ প্রয়োগ করে প্রায় ৮৫ শতক জমির ফসল আংশিকভাবে নষ্ট করে দেয় আফজাল কবির ও হারুন মিয়ার অনুসারীরা। কিন্তু সম্পূর্ণ ফসল নষ্ট করতে না পেরে তারা নতুন পরিকল্পনায় নামে। এরই ধারাবাহিকতায় ২২ নভেম্বর ভোররাতে আফজাল হোসেন কবির, হারুন মিয়াসহ ৪০–৪৫ জন ভাড়াটিয়া শ্রমিক সংগঠনের লোকজন নিয়ে মজাহার আলীর জমিতে অনধিকার প্রবেশ করে পাকা ধান কাটতে শুরু করে। স্থানীয়রা শব্দ শুনে এগিয়ে এলে তারা দ্রুত পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা কাটা ধান দেখে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরদিন মজাহার আলী ভুরুঙ্গামারী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তবে অভিযোগের পরও পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে না যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভুক্তভোগী পরিবার। তদন্ত না করায় ধান কেটে ফেলার আলামত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ তার।
এদিকে থানায় অভিযোগ গ্রহণ না হওয়ায় বাধ্য হয়ে মজাহার আলী কুড়িগ্রাম আমলি আদালত, ভুরুঙ্গামারীতে আফজাল হোসেন কবির ও হারুন মিয়াসহ ১৪ জনকে আসামি করে একটি পিটিশন মামলা দায়ের করেন যার নং ১৮১/২৫। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য ভুরুঙ্গামারী থানাকে নির্দেশ দেয়।
ভুক্তভোগী মজাহার আলী বলেন, “আমার ওয়ারিশসূত্রে পাওয়া জমি জোরপূর্বক দখল করতে তারা পরিকল্পিতভাবে ফসল নষ্ট করছে। আদালত নির্দেশ দেওয়ার পরও পুলিশ ব্যবস্থা না নেওয়ায় আমরা আরও আতঙ্কে আছি।”
এ বিষয়ে ভুরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আল হেলাল মাহমুদ জানান, আদালত পিটিশন মামলা তদন্তের জন্য প্রেরণ করেছে। তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে বিজ্ঞ আদালতে প্রতিবেদন পাঠানো হবে।
স্থানীয়রা দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
