
|| আল-আমিন হোসেন | নিজস্ব প্রতিনিধি (সিরাজগঞ্জ) ||
সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে শিক্ষক ও অভিভাবকদের সমন্বিত উদ্যোগে “শিক্ষার মান উন্নয়ন ও শিক্ষকের মর্যাদা বৃদ্ধিতে রাষ্ট্র ও সমাজের করণীয়” শীর্ষক একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বেলকুচি বহুমুখী মহিলা কলেজ প্রাঙ্গণে আয়োজিত এ সেমিনারে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, অভিভাবক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও শিক্ষানুরাগীরা অংশগ্রহণ করেন।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বেলকুচি মডেল ডিগ্রি কলেজের সভাপতি জনাব আমিরুল ইসলাম খান আলীম। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, শিক্ষকদের মর্যাদা নিশ্চিত করতে হলে শিক্ষিত ও যোগ্য ব্যক্তিদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গর্ভনিং বডিতে দায়িত্ব দেওয়া জরুরি। তিনি শিক্ষকদের বেতন ও পেনশন সংক্রান্ত জটিলতার বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, শিক্ষকরা যেনো অবসরের পর সম্মানের সঙ্গে জীবনযাপন করতে পারেন সে বিষয়টি রাষ্ট্রকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, দায়িত্ব পাওয়ার সুযোগ হলে তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করবেন এবং বেলকুচিতে একটি ডিজিটাল হেল্পলাইন চালু করার প্রতিশ্রুতি দেন, যাতে নারীরা যেকোনো সমস্যায় সহজে যোগাযোগ করতে পারেন। তিনি বলেন, “শিক্ষা শুধু পরীক্ষার ফল নয়—প্রকৃত মানুষ তৈরি করাই শিক্ষার মূল লক্ষ্য। শিক্ষক ও অভিভাবকের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই বেলকুচির শিক্ষাব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে পারে।”
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে পাঠ্যক্রমের পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভরতা এবং বিদ্যালয়–অভিভাবক–সমাজের সমন্বিত ভূমিকা অপরিহার্য। তিনি আরও বলেন, “সমাজে শিক্ষকতা পেশার মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হলে শিক্ষার মান এমনিতেই উন্নত হবে।”
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও সাবেক সংসদ সদস্য এম. আকবর আলী। আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টোর পরিচালক মোহাম্মদ বেলাল হোসেন, বেলকুচি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের উপপরিচালক ইঞ্জিনিয়ার আইয়ুব আলী, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা পরিদর্শক শামীম হাসান এবং মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড পরিদর্শক ড. মাসুদ রানা খান।
বক্তারা শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা ও সুশাসন নিশ্চিত করা, প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা বিস্তার, শিক্ষক–অভিভাবক যোগাযোগ জোরদার এবং শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সেমিনার শেষে একটি মুক্ত আলোচনা পর্ব অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে মাঠপর্যায়ে শিক্ষা ব্যবস্থার চ্যালেঞ্জ ও করণীয় নিয়ে শিক্ষকরা তাদের মতামত তুলে ধরেন।
আলোচনাসমৃদ্ধ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে সেমিনারটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়।
