রবিবার, ডিসেম্বর ২১

বিশ্ব মেডিটেশন দিবসে খুলনায় একযোগে ধ্যান কর্মসূচি

|| শেখ শাহরিয়ার | জেলা প্রতিনিধি (খুলনা) ||

নিয়মিত মেডিটেশন মানসিক প্রশান্তি বজায় রাখে, স্নায়ুপেশী শিথিল করে এবং মানসিক চাপ কমিয়ে মানুষের সামগ্রিক সুস্বাস্থ্যে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে—এই বিশ্বাসকে সামনে রেখে খুলনায় নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে বিশ্ব মেডিটেশন দিবস।

রবিবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল থেকে নগরী ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় একযোগে ঘণ্টাব্যাপী উন্মুক্ত মেডিটেশন কর্মসূচি আয়োজন করে দেশের অন্যতম বৃহৎ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। কর্মসূচিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার হাজারো শান্তিপ্রিয় মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

খুলনার শহীদ হাদিস পার্ক, জাতিসংঘ শিশু পার্ক, নিরালা পার্ক, সোনাডাঙ্গা সোলার পার্ক, রূপসা ব্রিজ গোলচত্বর, খুলনা বিশেষায়িত হাসপাতাল চত্বর, কুয়েট শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ, রূপসার বেলফুলিয়া স্কুল মাঠসহ খুলনা বিভাগের বিভিন্ন স্থানে একযোগে এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। একইসঙ্গে বাগেরহাট পৌর পার্ক, ফকিরহাট ইউনিয়ন পরিষদ চত্বর, গোপালগঞ্জ ডিসি অফিসের সুশাসন চত্বর এবং সাতক্ষীরার শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কেও মেডিটেশন কর্মসূচি পালিত হয়।

সম্মিলিতভাবে ভালো থাকার প্রত্যয় উচ্চারণের মধ্য দিয়ে কর্মসূচির সূচনা হয়। পরে অংশগ্রহণকারীরা নীরবে ধ্যানচর্চায় নিমগ্ন হন। আয়োজকদের মতে, ব্যক্তির মন সুস্থ থাকলেই পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব।

অনুষ্ঠানে প্রচারিত অডিওবার্তায় কোয়ান্টাম মেথডের উদ্ভাবক শহীদ আল বোখারী মহাজাতক বলেন, ‘কোয়ান্টাম তিন দশক ধরে বলে আসছে—মন ভালো তো সব ভালো।’ তিনি জানান, জাতিসংঘ ২০২৪ সালে ২১ ডিসেম্বরকে বিশ্ব মেডিটেশন দিবস হিসেবে ঘোষণা করায় বাংলাদেশের মেডিটেশনপ্রেমীদের মাঝে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। এ লক্ষ্যে কোয়ান্টাম ২০২৫ সালকে ‘দ্য ইয়ার অব মেডিটেশন’ হিসেবে ঘোষণা করেছে।

আলোচনায় বর্তমান ডিজিটাল জীবনের অতিরিক্ত উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, অস্থিরতা, ট্রমা ও অনিশ্চয়তা থেকে সৃষ্ট মনোদৈহিক সমস্যার বিষয়টি গুরুত্ব পায়। বক্তারা বলেন, এসব সমস্যা থেকে মুক্তির কার্যকর উপায় হলো নিয়মিত মেডিটেশন চর্চা। তাই মেডিটেশনের বার্তা প্রতিটি ঘরে পৌঁছে দেওয়া প্রয়োজন।

উল্লেখ্য, জাতিসংঘের ঘোষণার মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে মানসিক ও শারীরিক সুস্বাস্থ্যের গুরুত্ব নতুনভাবে তুলে ধরা হয়েছে। বৈজ্ঞানিক গবেষণার ভিত্তিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও মেডিটেশনকে নিজের যত্ন নিজে নেওয়ার একটি কার্যকর পদ্ধতি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আয়োজকদের প্রত্যাশা, বিশ্ব মেডিটেশন দিবসকে কেন্দ্র করে আরও বেশি মানুষ যুক্ত হবেন এই শান্তিপূর্ণ ও ইতিবাচক জীবনচর্চায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *