|| প্রফেসর ড. আ.ব.ম. সাইফুল ইসলাম সিদ্দীকী ||
অভিজ্ঞতা
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণার একমাত্র প্রতিষ্ঠান। দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে উপযুক্ত সুশীল দক্ষ সরবরাহ, দেশপ্রেমিক সুনাগরিক এবং দেশ জাতির রক্ষায় অতন্ত্রপ্রহরী তৈরীতে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান অনস্বীকার্য। দেশের ৫২ এর ভাষা আন্দোলন থেকে ২০২৪ এর ছাত্রআন্দোলন পর্যন্ত দেশ মাতৃকা রক্ষায় বা যেকোনো প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অবদান কোনোভাবে ছোট করে দেখার অবকাশ নেই। বিশেষত গত আগস্ট ৫ তারিখের আন্দোলন দেশের ইতিহাসের একটি অবিস্মরণীয় অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ নিয়মিত পদ হলো প্রফেসর পদ। অতীতে এ পদে উন্নীত হতে আন্তর্জাতিক মানের অনেক বাঘা বাঘা শিক্ষকও ব্যর্থ হয়েছেন। এ প্রমাণ আমাদের সামনে অহরহ। যেমন- ড. মোঃ শহিদুল্লাহ। বর্তমানে আপগ্রেডেশনের কারণে পিএইচডি এবং আর্টিকেল থাকলে ১০ থেকে ১২ বছরের মধ্যেই এ পদে অধিষ্ঠিত হওয়া যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের পরিচালনার জন্য এ প্রফেসরদের থেকে যে কোনো একজন শিক্ষাবিদকে চ্যান্সেলর মহোদয়, ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে নিয়োগ দিয়ে থাকেন। যদিও গত তিন দশক থেকে দু চারজন ছাড়া আমরা কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েই সেই আন্তর্জাতিক মানের একাডেমিক কোনো ভাইস চ্যান্সেলর পাইনি।
৯০ এর দশকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পর আমার বিশ্ববিদ্যালয় ডজনাধিক ভাইস চ্যান্সেলর অধিষ্ঠিত হতে এবং চলে যেতে দেখেছি। এঁরা প্রত্যেকেই কোনো না কোনো দলীয় সরকার কর্তৃক নিয়োগকৃত ছিলেন। দলীয়ভাবে নিয়োগ হওয়ার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এমন দলকানাও ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ হয়েছেন, যিনি এ পদ ছেড়ে কোনো কোনো ছাত্র সংগঠনের প্রধান হওয়ারও আগ্রহ প্রকাশ করতেও দ্বিধাবোধ করেননি। আবার কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন প্রধানকেও দেখা গেছে যাঁর একাডেমিক দিক এত below standard ছিল যে ভিসির চেয়ারটি তার সাথে একেবারেই বেমানান ছিল। চেয়ারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে একাডেমিক উন্নয়নের পরিবর্তে তারা দলের উন্নয়ন, দলের শিক্ষকদের উন্নয়ন ছাড়া আশানুরূপ তেমন কিছু করতে দেখা যায়নি তার কার্যকালে। বিশেষত: একাডেমিক সাইডে। প্র্যাকটিসটি গত চার দশক থেকেই চলে আসছে। যার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একাডেমিক অবস্থা এত নিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে যে, বিশ্ব রেংকিংএ দেশের দেড়শতাধিক সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনোটিই অবস্থান করে নিতে পারছে না। ফলে উচ্চ শিক্ষা ব্যবস্থা একেবারে রসাতলে যাচ্ছে।
বাস্তবতা
ভাইস চ্যান্সেলরগণ দলের প্রতি অনাকাংখিত অত্যাধিক আনুগত্যের কারণে দেশের পট-পরিবর্তনের সাথে সাথে পদত্যাগ করেন। কেউ বা পিছন দরজা দিয়ে পালিয়ে যান। কেউ বা কর্মস্থলে আর ফিরে আসেন না। অজানা স্থান থেকে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। বিষয়টি যেমন এ পদের সাথে বেমানান তেমনি দুঃজনকও। তখন সেসব পদে অধিষ্ঠিত হতে অপেক্ষমানরা লাইনে দাঁড়িয়ে যান।
বরাবরের মতো দেশের পট-পরিবর্তনের কারণে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষকর্তাদের পদত্যাগের হিড়িক পড়ে যায়। বরাবরের মতো এবারের চিত্রটিও ভিন্ন রকম নয়। বরং আরো বেশি। বর্তমানে শীর্ষস্থানীয় নির্বাহীগণ তিনটি পদ হতে পদত্যাগের কারণে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিকাংশ পদই খালি হয়েছে বা হচ্ছে। এ ছাড়াও বেসরকারি শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়েরও অবস্থাও টলটলায়মান। তাই এ তিনটি পদ পূরণের জন্য সরকারি অর্ধশতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৪৩=১৬২ জন প্রফেসর অনুরূপভাবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০৬৩=৩১৮ জন প্রফেসর প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। অর্থাৎ এই মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয়েসমূহের সর্বোচ্চ ৩টি পদে নিয়োগের জন্য ৪৮০ জন প্রফেসরের প্রয়োজন।
হঠাৎ করে একসাথে এতগুলো পদ একসাথে খালি হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমান প্রেক্ষাপটে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষককে দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন পর্যন্ত দায়িত্ব পালনের জন্য। যদিও কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এর ব্যত্যয় ঘটেছে। উচ্চ শিক্ষাক্ষেত্রে এ ধরণের ইতিবাচক ভূমিকা পালন করার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ। এ প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার কারণে বিষয়টি আমরা নিশ্চিত হতে পেরেছি যে, সরকার বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে নির্বাহী তিনটি পদ পূরণের জন্য শিক্ষক বাছাই করতে একটু সময় নিচ্ছে।
দলীয় সরকারের আমলে এসব পদে নিয়োগের জন্য দলীয় প্রফেসরদের নির্বাচিত করতে কোনো অসুবিধা হত না। কিন্তু বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে এ বিষয়টি বিরাট চ্যালেঞ্জ বলে মনে হচ্ছে। কারণ সরকারের কাছে একটি বিষয় স্পষ্ট তো প্রমাণিত হয়েছে যে, দলীয় সরকার কর্তৃক নিয়োগকৃত ভাইস চ্যান্সেলরগণ দলীয়ভাবে যত যোগ্য ছিলেন একাডেমিক দিক থেকে ততো পরিপুষ্ট ছিলেন না। একথাও সত্য যে, বিশ্ববিদ্যালয়ে খুব অল্প শিক্ষক ব্যতীত অধিকাংশ শিক্ষকই কোনো না কোনো দলের সাথে সংশ্লিষ্ট রয়েছেন। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নির্দলীয় প্রফেসরগণ এসব পদে অধিষ্ঠিত হবেন এটাই স্বাভাবিক কথা। কিন্তু দেশের বৃহৎ তিনটি দলের পরিবেশ অনুকূলে থাকা দুটি দলের প্রফেসরগণ এপদগুলোতে অধিষ্ঠিত হতে সরকারের প্রতি চাপ প্রয়োগ করছে বলে মনে হয়। এখন এতিনটি পদে বিশেষত: ভিসি পদে নির্দলীয় যোগ্য প্রফেসর পাওয়া সরকারের পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার কারণে সরকার স্বাচ্ছন্দে এ পদগুলো পূরণে যথেষ্ট সময় নিচ্ছে।
গত সরকারের আমলেও একটি সার্চ কমিটি হয়। সেই কমিটি সকল বিশ্ববিদ্যালয় হতে টপটেন প্রফেসরদের তালিকা এবং বায়োডাটা সংগ্রহ করে। যদিও সেটা ছিল আই ওয়াশ। সরকার তার পছন্দমত দলীয় প্রফেসরদেরকেই ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেয়।
দলীয় সরকারের আমলে দলীয় প্রফেসর ছাড়া ভাইস চ্যান্সেলর হয়েছেন এমন রেকর্ড সম্ভবত পাওয়া যাবে না। তাই এতিনটি পদে বিশেষত: ভিসি পদের নিয়োগে সরকারকে ভেবেচিন্তে নিয়োগ দিতে হচ্ছে। যাতে শীর্ষস্থানীয় দলীয় কেউ সে পদগুলোতে অধিষ্ঠিত না হন। তাহলে সরকার সমালোচনার মুখে পড়বে। এমতাবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ে এত জন নির্দলীয় যোগ্য প্রফেসর বের করা এ সরকারের পক্ষে কতটুকু সম্ভব হবে জানি না। তাই আমি অতি দ্রুত একটি উচ্চপর্যায়ের সার্চ কমিটি গঠন করা বিষয়ে সরকারে প্রতি সবিনয় অনুরোধ করছি। তিনটি নির্বাহী পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে কিছু ক্রাইটেরিয়া ও শর্তারোপ বিষয়ে কয়েকটি প্রস্তাবনাও রাখছি।
প্রস্তাবসমূহ
এখন সবচাইতে প্রয়োজন হলো- ৩ জন সাবেক ভাইস চ্যান্সেলরকে দিয়ে উচ্চতর একটি সার্চ কমিটি গঠন করা। কমিটি কিছু ক্রাইটরিয়া দিয়ে একটি আবেদন পত্র তৈরী করে তা প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিষ্ট্রারের কাছে প্রেরণ করা। আবেদন পত্রে উল্লেখিত ক্রাইটরিয়া পরিপূর্ণকারীদের আবেদনগুলো বাছাই করে যোগ্য প্রফেসর (সাবেক সরকারের দলীয়দের বাদে)কে নিয়োগ দেয়া। বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের তিনটি নির্বাহী পদে নিয়োগের জন্য নিম্নের মৌলিক চারটি পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে।
প্রথম পদ্ধতি: জ্যেষ্ঠ প্রফেসরদেরকে নিয়োগ দেওয়া। এখানে দলীয়/একাডেমিক বিষয়টি বিবেচ্য নয়। এভাবে নিয়োগে সার্চ কমিটির কোনো বেগ পেতে হবে না।
দ্বিতীয় পদ্ধতি: একাডেমিক ও প্রশাসনিক উভয় দিক থেকে যোগ্য প্রফেসরকে নিয়োগ দেওয়া। এখানে দলীয় বিষয়টি বিবেচ্য নয়।
তৃতীয় পদ্ধতি: দলে বিভিন্ন পদে থাকা প্রফেসরদেরকে নিয়োগ দেওয়া। এখানে একাডেমিক বিষয়টি বিবেচ্য নয়।
এজন্য নিম্নের ক্রাইটরিয়াগুলো ফলো করলে সেসব পদের জন্য প্রফেসর বাছাই করা সার্চ কমিটির জন্য সুবিধা হবে। তা হলো-
বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিতে যারা দলীয় কার্যকরী পরিষদে ছিলেন। (তবে সংগঠনবিরোধী বা দেশদ্রোহিতা বা প্রতিষ্ঠান স্বার্থবিরোধী কাজে অংশগ্রহণকারী অনুপযুক্ত বলে বিবেচিত হবেন)
শিক্ষকতা জীবনে শিক্ষক সমিতির কার্যকরী পরিষদে কমপক্ষে একবার ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি করার কারণে পুরস্কার স্বরূপ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রশাসনিক পদ যেমন প্রভোস্ট/পরিচালক/ছাত্র উপদেষ্টা/প্রক্টর ইত্যাদি পদে কমপক্ষে যে কোনো একটির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
যেহেতু এখন সদ্য বিদায়ী সরকারপন্থীদের পরিবেশ প্রতিকূলে। তাই তারা অলিখিতভাবে এই তিন পদের জন্য অনুপযুক্ত। বাকী দু’দলপন্থী প্রফেসরদের পরিবেশ যেহেতু অনুকূলে তাই তাদের দলীয় পরিচয়ে এ তিনটি পদ পূরণ করা যেতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতিতে কে কত দক্ষ পরিপক্ক সেটা অবশ্য জানা যাবে উপরের তিনটি ক্রাইটেরিয়ার মাধ্যমে। যদি কোনো শিক্ষক এই তিনটির সবগুলোতে অথবা কোনো একটির একাধিক পদে নির্বাচিত হয়ে থাকেন, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনটি পদে নিয়োগের জন্য তাকে অগ্রাধিকার প্রদান করা যেতে পারে। যে যাই মনে করেন না কেন এ পদগুলোর তারাই এখন হকদার। কারণ সূদীর্ঘ ১৫ বছর থেকে তারা এ পদগুলোতে যাওয়ার জন্য রাজনীতি করেছেন এবং নিজেদেরকে ধার দিয়ে প্রস্তুত করেছেন। পরিবেশ অনুকূল না হওয়ায় তারা সে পদগুলোতে যেতে পারেননি। সরকার অন্তর্বর্তীকালীন হোক বা নিরপেক্ষ অথবা তত্ত্বাবধায়ক হোক পরিস্থিতি এখন তাদের অনুকূলে। কাজেই দেশের সকল প্রধান পদে বিশেষত বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের নির্বাহী তিনটি পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার তারাই একমাত্র উপযুক্ত। অন্য কেউ নয়। এদের একাডেমিক যোগ্যতা যাই থাকুক না কেন আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী হোন বা না হোন তারাই বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী তিনটি পদের অধিকারী হবেন। এই মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী তিনটি পদ পূরণ করা হলে দেশের রাজনীতিতে অন্তত একটি ব্যালেন্স হবে। সরকারও নিশ্চিন্ত থাকতে পারবে।
চতুর্থ পদ্ধতি : নির্দলীয় একাডেমিক প্রফেসরদের নিয়োগ দেওয়া:
বিশ্ববিদ্যালয় সমূহে ১৫ হাজারের অধিক শিক্ষকের মধ্যে কমপক্ষে এক চতুর্থাংশ প্রফেসর রয়েছেন। আবার এদের মধ্যে সহশ্রাধিক প্রফেসর রয়েছেন গ্রেড-১ প্রাপ্ত। এ বিষয়ে একটি ক্রাইটেরিয়া নির্ধারণ করা যেতে পারে। এবং প্রতিটি বিষয়ে পয়েন্ট বা নাম্বার নির্ধারণ করে প্রাপ্ত নাম্বারের ভিত্তিতে একটি তালিকা করা যেতে পারে। এ জন্য নিম্নের ক্রাইটেরিয়াগুলো ফলো করলে সেসব পদের জন্য প্রফেসর বাছাই করা সুবিধা হবে।
- গ্রেড-১ প্রফেসর হবেন।
- সিনিয়র প্রফেসর হবেন।
- প্রফেসর পিএইচডি ডিগ্রিধারী হবেন।
- প্রতিটি কোর্সের ন্যূনতম ক্লাস সংখ্যা বিবেচনায় আনা।
- কমপক্ষে তিনজনকে পিএইচডি ডিগ্রী প্রদানকারী হবেন।
- প্রশাসনিক পদ অন্ততঃ চেয়ারম্যান ও ডিন থাকা চাই।
- বিদেশী জার্নালে কমপক্ষে একটি প্রবন্ধ থাকতে হবে।
- প্রফেসর হওয়ার জন্য নির্ধারিত প্রবন্ধ ছাড়াও অন্তত পাঁচটি একক প্রবন্ধ থাকতে হবে।
- শিক্ষা জীবনে অন্তত একটি প্রথম বিভাগ/শ্রেণী থাকবে(তৃতীয় শ্রেণি থাকবে না)।
- যোগ্য সৎ নিষ্ঠা ছিলেন এমন প্রমাণ থাকতে হবে।
- বিদেশে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের এমফিল পিএইচডির পরীক্ষক থাকতে হবে।
- বিশ্ববিদ্যালয়ে অথবা অন্য অনুষদের সেমিনার/ওয়ার্কশপে রিসোর্স পারসন হতে হবে।
- বিদেশী বিশ্ববিদ্যায়ে সেমিনারে আর্টিকেল প্রেজেন্ট/আলোচক/অতিথি/কোন অধিবেশনের চেয়ারপারসন থাকতে হবে।
- কমপক্ষে তিনটি গ্রন্থ থাকতে হবে। তন্মধ্যে একটি স্নাতক/ স্নাতকোত্তর পর্যায়ের রেফারেন্স গ্রন্থ হতে হবে।
- দেশের খ্যাতনামা গবেষণা সংস্থায় কমপক্ষে দুটিতে প্রবন্ধকার/গ্রন্থাকার/রিভিউয়ার/সদস্য থাকতে হবে।
- প্রথম শ্রেণীর দৈনিক পত্রিকায় দেশ জাতি ধর্ম সংস্কৃতি/বিভাগীয় সাবজেক্টের উপর কমপক্ষে তিনটি প্রবন্ধ থাকতে হবে।
- অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে/গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সেমিনারে রিসোর্স পারসন/প্রবন্ধকার/ প্রধান অতিথি/ প্রধান আলোচক/ সভাপতি থাকতে হবে।
- অন্য বিশ্ববিদ্যালয়/অনুষদের জার্নালে কমপক্ষে তিনটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হতে হবে।
- অন্য বিশ্ববিদ্যালয়/অনুষদের জার্নালে কমপক্ষে তিনটি প্রবন্ধের রিভিউয়ার হতে হবে।
- প্রফেসর শিক্ষার্থী বান্ধব হতে হবে।
- ব্যক্তিত্বসম্পন্ন হতে হবে।
- শিক্ষার্থী ও সহকর্মীদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা থাকতে হবে।
- একাডেমিক ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি থাকতে হবে।
- অসামাজিক কাজে লিপ্ত ছিলেন না মর্মে প্রমাণ থাকা।
- স্ববিশ্ববিদ্যালয়ে তার ওজনটুকুও যাচাই করা চাই।
- ভালো শিক্ষক মর্মে ছাত্রদেরও একটি সার্টিফিকেট থাকা চাই।
- শিক্ষা দেশ জাতির উন্নয়নের চিন্তক মর্মে প্রমাণ থাকা চাই।
- পারিবারিক ঐতিহ্যটিও বিবেচনায় আনা প্রয়োজন।
- কোন পদে থাকাকালীন স্বচ্ছ ছিলেন মর্মেও প্রমাণ থাকা চাই।
- শিক্ষাসহ দেশজাতির উন্নয়নে তার অবদানকেও বিবেচনায় আনা।
- শিক্ষকতা জীবনে শিক্ষা গবেষণায় বিশেষ অবদানকে বিবেচনা করা।
- সহকর্মী এবং শিক্ষার্থীদের সাথে তার সদাচরণের সার্টিফিকেট থাকা চাই।
- শিক্ষকতা জীবনী শিক্ষার্থীদের মান উন্নয়ন তার অবদানকে বিবেচনায় আনা।
- প্রশাসনিক পদে থাকাকালীন আর্থিক লেনদেনের বিষয়টিও বিবেচনায় থাকা।
- সহকর্মী এবং শিক্ষার্থীদের সাথে তার সদাচরণের সার্টিফিকেট থাকা চাই।
- বর্তমান ছাত্র আন্দোলনের সাথে সম্পর্ক থাকাটাও বিবেচনায় আনা যেতে পারে।
- দেশ জাতির ক্ষতি হয়েছে এমন কোন কাজে অংশগ্রহণ নেই মর্মেও প্রমাণ থাকা চাই।
- ছাত্র জীবন থেকে শিক্ষকতা জীবন পর্যন্ত দেশজাতির উন্নয়নে কিছু করেছেন/লিখেছেন মর্মে প্রমাণ থাকা চাই।
- ট্রেজারার পদের জন্য বিবিএ অনুষদের একাডেমিক শিক্ষকদের অগ্রাধিকার থাকা।
- প্রোভিসি প্রশাসনিক পদের জন্য ন্যূনতম প্রশাসনিক যোগ্যতা থাকা বাঞ্ছনীয়।
- প্রোভিসি একাডেমিক এর জন্য একাডেমিক উৎকর্ষতা প্রমাণ থাকা বাঞ্ছনীয়।
এছাড়া সার্চ কমিটি আরো যে বিষয় উপযুক্ত মনে করবে তা নির্ধারণ করে খুব দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা এটাই সময়ের দাবি। এটা জাতিরও প্রত্যাশা।
(এগুলো একান্তই আমার নিজস্ব মতামত। এর চাইতে আরো ভালো পরামর্শ আসতে পারে এবং আসা উচিত। এ সময় আমরা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকগণ দেশ জাতিকে নিয়ে চিন্তা না করলে দেশ জাতি আমাদের ক্ষমা করবে না।)
লেখক: সাবেক ডিন, থিওলজী এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।