
|| মো. আছিবুল ইসলাম | বানারীপাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি ||
বানারীপাড়ায় সদ্যপ্রয়াত ওসমান হাদীকে নিয়ে প্রকাশ্যে কুরুচিপূর্ণ ও অশ্লীল মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগের স্থানীয় এক নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ব্যক্তি হলেন পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার ও আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল হাসান হিরণ।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বানারীপাড়া হাইস্কুল মসজিদের পাশ এলাকায় প্রকাশ্যে অবস্থান করে রেজাউল হাসান হিরণ ওসমান হাদীকে উউদ্দেশ্য করে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেন। এ সময় তিনি হাদীর ব্যক্তিগত মর্যাদা ও দেশের প্রতি অবদান অস্বীকার করে অবমাননাকর বক্তব্য দেন। একই বক্তব্যে তিনি উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন এবং এনসিপির এক নারী নেত্রীকে উদ্দেশ্য করে শালীনতাবিরোধী ও ব্যক্তিগত আক্রমণমূলক মন্তব্য করেন।
ঘটনার বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক মো. রাসেল ও জামায়াত নেতা সোহেল জানান, ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ওই এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় তারা জনসমাগম দেখতে পান। কৌতূহলবশত এগিয়ে গিয়ে তারা দেখেন, নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগের নেতা রেজাউল হাসান হিরণ প্রকাশ্যে ওসমান হাদীকে গালিগালাজ করছেন এবং একই সঙ্গে বিভিন্ন ব্যক্তিকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করছেন। তাদের ভাষ্যমতে, পুরো ঘটনার একটি অংশ গোপনে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বানারীপাড়া জামায়াতে ইসলামীর পৌর আমীর কাওসার হোসাইন বলেন, “হাদীর লাশ এখনও দাফনের আগেই একজন নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতা যেভাবে প্রকাশ্যে গালিগালাজ করেছে, তা মানবিকতা, আইন ও রাজনৈতিক শালীনতার চরম লঙ্ঘন। রেজাউল হাসান হিরণকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। আমরা প্রশাসনের কাছে নিরপেক্ষ ও দৃষ্টান্তমূলক তদন্ত দাবি করছি।”
এছাড়া নিন্দা জানিয়ে বানারীপাড়া আত-তাওহীদ অর্গানাইজেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক আল মাহাদী বিন আব্দুস সালাম বলেন, “রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় রাখা স্মরণীয় একজন ব্যক্তিকে একজন নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতা প্রকাশ্যে গালি দেবে, এটা শুধু নৈতিক অপরাধ নয়, বরং রাষ্ট্র ও সমাজের প্রতি চরম ঔদ্ধত্য। অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।”
এ বিষয়ে বানারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মুজিবুর রহমান জানান, “ঘটনাটি সম্পর্কে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে একটি টিম মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করেছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ঘটনাটি নিয়ে বানারীপাড়ার রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার ঝড় উঠেছে। সচেতন মহলের মতে, রাজনৈতিক পরিচয় যাই হোক না কেন, মৃত্যু ও মানবিকতার প্রশ্নে শালীনতা বজায় না রাখলে সমাজে এর নেতিবাচক প্রভাব আরও গভীর হবে।
