মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ২৩

প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের সাফল্য : আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতায় সক্রিয় উপস্থিতি

|| নিজস্ব প্রতিবেদক ||

প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতায় নিয়মিত সাফল্য অর্জন করেছে। সাহিত্য, ভাষা ও সংস্কৃতিভিত্তিক এসব প্রতিযোগিতায় সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অংশ নিয়ে তারা একাধিক পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছে।

সম্প্রতি ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি আয়োজিত ‘লিট কার্নিভাল’-এ প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। কবিতা পাঠ, সৃজনশীল লেখা ও ভাষাভিত্তিক বিভিন্ন ইভেন্টে অংশ নিয়ে তারা দুটি পুরস্কার অর্জন করে। আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের বিষয়বস্তু নির্বাচন ও উপস্থাপনার ধারাবাহিকতা বিচারকদের কাছে গুরুত্ব পেয়েছে।

একই সময়ে ডুয়েট (DUET) আয়োজিত আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ভাষা প্রতিযোগিতায় ‘প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব’ অংশগ্রহণ করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। প্রতিযোগিতার বিভিন্ন রাউন্ডে ভাষা দক্ষতা, তাৎক্ষণিক ভাব প্রকাশ এবং দলগত সমন্বয়ের ভিত্তিতে বিজয়ী নির্ধারণ করা হয়। প্রতিযোগীদের নিয়মিত অনুশীলন ও দলগত প্রস্তুতির কারণে দলটি শেষ পর্যন্ত শিরোপা অর্জন করতে সক্ষম হয়।

এছাড়াও সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি আয়োজিত লোকসংস্কৃতি প্রতিযোগিতার ‘লোকচিত্র’ বিভাগে অংশ নিয়ে ইংরেজি বিভাগের এক শিক্ষার্থী ফার্স্ট রানার-আপ হন। লোকজ বিষয় ও চিত্রভাষার ব্যবহার প্রতিযোগিতায় ইতিবাচক সাড়া পায়। বিচারকদের মতে, বিষয় নির্বাচন ও উপস্থাপনায় সমন্বয়ের কারণে কাজটি আলাদা করে নজরে আসে। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিসহ দেশের আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতায়ও প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। এসব প্রতিযোগিতায় বক্তৃতা, বিতর্ক, সাহিত্য উপস্থাপনা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় তারা বিভিন্ন বিভাগে পুরস্কার ও সম্মাননা অর্জন করেছে।

এই অর্জন প্রসঙ্গে ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নাজলা ফাতমী বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুমের বাইরেও শেখার সুযোগ দিতে চেষ্টা করি। এ ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ তাদের ভাষা ব্যবহার, আত্মবিশ্বাস ও দলগত কাজের অভিজ্ঞতা বাড়ায়। শিক্ষার্থীরা নিয়মিত চর্চা করছে বলেই ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, প্রতিযোগিতাগুলোর আগে শিক্ষার্থীদের জন্য প্রস্তুতি সভা, দলগত অনুশীলন এবং শিক্ষক পরামর্শের ব্যবস্থা করা হয়। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের বিষয়বস্তু নির্বাচন, উপস্থাপনার কাঠামো ও সময় ব্যবস্থাপনা বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও আন্তরিকতাও সাফল্যের অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এক মঞ্চে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তারা নিজেদের দক্ষতা যাচাইয়ের সুযোগ পাচ্ছে। একই সঙ্গে নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন এবং ভিন্ন পরিবেশে কাজ করার মাধ্যমে আত্মবিশ্বাস তৈরি হচ্ছে।

ইংরেজি বিভাগের ধারাবাহিক সাফল্যকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিন্সিপাল এডভাইজার প্রফেসর ড. মো: আনোয়ারুল কবির। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের এই অর্জনের ফলে ক্যাম্পাসে সহশিক্ষা কার্যক্রমে নতুন গতি এসেছে। আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ তাদের একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি ভাষা ব্যবহার, আত্মপ্রকাশ এবং আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সহায়ক হচ্ছে। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করছে, যা ব্যক্তিগত ও শিক্ষাগত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তিনি আরও জানান, এই ধরনের কর্মকাণ্ড শিক্ষার্থীদের সময় ব্যবস্থাপনা, দলগত কাজ এবং নেতৃত্বের দক্ষতা উন্নত করতে সহায়ক। প্রস্তুতির প্রতিটি ধাপে দায়িত্ব ভাগ করে কাজ করা, সময়মতো কাজ শেষ করা এবং প্রতিযোগিতার চাপ সামলানোর অভিজ্ঞতা শিক্ষাজীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

ভবিষ্যতেও এ ধরনের অংশগ্রহণ অব্যাহত রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। জাতীয় পর্যায়ের সাহিত্য, ভাষা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য নিয়মিত অনুশীলন, কর্মশালা এবং প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হবে। শিক্ষকরা আশা করছেন, ধারাবাহিক অংশগ্রহণ শিক্ষার্থীদের দক্ষতা আরও বৃদ্ধি করবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্বকে আরও শক্তিশালী করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *