বুধবার, নভেম্বর ২৬

দক্ষ জনবলের সংকটে খুলনার নতুন কারাগারে স্থানান্তর প্রক্রিয়া ধীরগতি

|| শেখ শাহরিয়ার | জেলা প্রতিনিধি (খুলনা) ||

দক্ষ জনবল ঘাটতির কারণে খুলনার নতুন জেলা কারাগারের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না। উদ্বোধনের পর ২২ দিনে সেখানে পুরোনো কারাগার থেকে মাত্র ১৪০ জন বন্দিকে স্থানান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে ৮০ জন কারারক্ষী দিয়ে নতুন কারাগারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে, যা দক্ষ জনবল হিসেবে প্রয়োজনের তুলনায় কম বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।

খুলনা জেলা কারাগারের জেলার মো. মুনীর হুসাইন জানান, পুরোনো কারাগারে বর্তমানে ১ হাজার ৩৯ জন বন্দি রয়েছে, যেখানে ধারণ ক্ষমতা মাত্র ৬৭৮ জন। এদের মধ্যে ২৮০ জন সাজাপ্রাপ্ত এবং ৩৬ জন ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত। অতিরিক্ত বন্দির চাপ কমাতে ধাপে ধাপে তাদের নতুন কারাগারে নেওয়া হচ্ছে।

এ পর্যন্ত ১ নভেম্বর ১০০ জন এবং ১৫ নভেম্বর আরও ৪০ জন কয়েদিকে নতুন কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আগামী রোববার (২৩ নভেম্বর) পাইকগাছা ও কয়রা উপজেলার ৮০ জন বন্দিকে সেখানে নেওয়া হবে। জেলার জানান, ভূমিকম্পসহ সাম্প্রতিক নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি বিবেচনায় দ্রুত স্থানান্তর প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

নতুন কারাগারে বর্তমানে ১৪০ জন বন্দির বিপরীতে ৮০ জন কারারক্ষী ডিউটি করছেন। এদের মধ্যে ৪৭ জন নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত এবং ৩৩ জন অন্য কারাগার থেকে আনা। এছাড়া আরও ১০ জনকে প্রশিক্ষণের জন্য রাজশাহীর কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে, যারা যুক্ত হলে জনবল কাঠামো কিছুটা শক্তিশালী হবে।

মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার খুলনা সমন্বয়কারী আইনজীবী মোমিনুল ইসলাম বলেন, “বিস্তৃত এলাকা নিয়ে গড়ে উঠেছে নতুন কারাগার। বন্দির সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিরাপত্তা রক্ষীর সংখ্যাও বাড়ানো জরুরি।”

পুরোনো ভৈরব নদের তীরের ১১৩ বছরের জরাজীর্ণ কারাগারের ঝুঁকি বিবেচনায় খুলনা বাইপাস সড়কের জয়বাংলা মোড়ের কাছে প্রায় ৩০ একর জমিতে নতুন কারাগার নির্মাণ করা হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী এখানে ৪ হাজার বন্দি রাখা সম্ভব হলেও প্রথম পর্যায়ের অবকাঠামোতে ২ হাজার বন্দি রাখার সক্ষমতা তৈরি হয়েছে।

দক্ষ জনবল সংকট কাটলে ধাপে ধাপে জেলার সব বন্দিকে নতুন কারাগারে নেওয়া হবে বলে জানায় কারা প্রশাসন। পুরোনো কারাগারটি খুলনা মেট্রোপলিটন এলাকার বন্দিদের জন্য চালু থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *