
|| আন্তর্জাতিক ডেস্ক ||
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া তাদের অভিন্ন সীমান্তে দীর্ঘ কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী সংঘাত বন্ধে একটি আনুষ্ঠানিক যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫) দুই দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এই ঐতিহাসিক ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
গত ২০ দিন ধরে চলা এই চরম সংঘাতের অবসান ঘটাতে দুই দেশই তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে, যা স্থানীয় সময় আজ দুপুর ১২টা থেকে কার্যকর হয়েছে। থাইল্যান্ডের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নাথাপন নাকফানিথ এবং কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী টে সিহা স্বাক্ষরিত এক যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, উভয় পক্ষই বর্তমানে সীমান্তে মোতায়েন করা সেনাদের অবস্থান অপরিবর্তিত রাখতে এবং নতুন করে কোনো সেনা সমাবেশ না করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই চুক্তির আওতায় সব ধরনের ভারী ও হালকা অস্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং বেসামরিক স্থাপনা বা অবকাঠামোর ওপর আক্রমণ সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত সীমান্ত বিরোধের জেরে শুরু হওয়া এবারের লড়াইয়ে দুই দেশের অন্তত ১০১ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং প্রায় ৫ লাখেরও বেশি মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। বিশেষ করে কম্বোডিয়ার সীমান্ত এলাকায় থাইল্যান্ডের বিমান হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গিয়েছিল, যা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকর্মীরা সরাসরি সংঘাতস্থল থেকে প্রত্যক্ষ করেছেন। এই যুদ্ধের ফলে পর্যটন ও বাণিজ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই অঞ্চলের অর্থনীতি মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছিল।
বর্তমানে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোট আসিয়ান (ASEAN)-এর একটি পর্যবেক্ষক দল এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ করছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই চুক্তি দুই দেশের মধ্যে সাময়িক স্থিতিশীলতা আনলেও দীর্ঘমেয়াদী শান্তির জন্য অমীমাংসিত সীমান্ত রেখার স্থায়ী সমাধান জরুরি। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর সীমান্ত সংলগ্ন এলাকার বাস্তুচ্যুত মানুষদের মধ্যে ঘরে ফেরার আশা জেগেছে। তবে পরিস্থিতি পুরোপুরি শান্ত হতে আরও কয়েক দিন সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
