
|| ডাঃ আনোয়ার সাদাত ||
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ছিল দীর্ঘদিনের জুলুম, নির্যাতন, দুঃশাসন, দুর্নীতি, অনিয়ম, লুটপাট, গুম, খুন, অপহরণ, ভোটাধিকার হরণসহ সব ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে তরুণ প্রজন্ম, ছাত্র ও জনতার ক্ষোভের বিস্ফোরণ। বৈষম্য ও ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপ করে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, জনগণের ক্ষমতায়ন এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে সুনিশ্চিত করাই ছিল এর মূল লক্ষ্য।
একটি বৈষম্যহীন, দূর্নীতিমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ ইনসাফপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে ফ্যাসিবাদের মূলোৎপাটন করে জুলাইয়ের চেতনার পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন করার বিকল্প নেই। এ ক্ষেত্রে সকল ক্ষেত্রে সংস্কার করে তা বাস্তবায়ন করতে পারলেই গণ-অভ্যুত্থানের আশা-আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হবে বলে সবাই আশা করে। প্রকৃত পক্ষে, একটি ন্যায় ও সাম্যভিত্তিক নতুন বাংলাদেশ জনগণের প্রত্যাশা। ’জুলাই, ২৪ সাম্যভিত্তিক, বৈষম্য ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছে। হাজার হাজার শহীদের আত্মত্যাগ ও হাজার হাজার ছাত্র জনতা পঙ্গুত্ব বরণ করে সংস্কার ও পরিবর্তনের যে সুযোগ এনে দিয়েছে, তা যে কোনো মূল্যে রক্ষা করতে হবে।
পতিত স্বৈরাচার, তাদের দোসর ও তার স্বার্থলোভী গোষ্ঠী এখনও দেশকে ব্যর্থ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করা সময়ের দাবি।
অথচ অত্যন্ত দুঃখের সাথে আমরা লক্ষ্য করছি, অনেক ক্ষেত্রে কিছু কিছু রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠী আজ পারস্পরিক কাদা ছোড়াছুড়ি, ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থ রক্ষা করতে দ্বন্দে লিপ্ত, যা জুলাই অভ্যুত্থানের সাথে সাংঘর্ষিক। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে শহীদের সেই কাংখিত লক্ষ্য পূরণে এগিয়ে আসতে হবে, যাতে বৈষম্যহীন ও ন্যায়ভিত্তিক, দূর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয় এবং যাতে আর কোনো স্বৈরাচার জন্ম নিতে না পারে।
লেখক: ইসলামিক স্কলার, সাংবাদিক ও চিকিৎসক (খুলনা)।