বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১

ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থান আমাদের কিছুকথা (৩)

এখন একটি নতুন তত্ত্ব হাজির করে বলা হচ্ছে আমেরিকা ষড়যন্ত্র করে এই অভ্যুত্থান ঘটিয়েছে। ভারতের গোপন আস্তানা থেকে শেখ হাসিনা ভিডিওতে বলেছেন, বঙ্গোপসাগরে সেন্ট মার্টিনের কর্তৃত্ব এবং গভীর সমুদ্র বন্দর করার সুযোগ দিতে রাজি না হওয়ায় আমেরিকা তাকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে। এই তত্ত্ব হাজির করে তিনি একদিকে ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানকে অস্বীকার করেছেন, অন্যদিকে তার সরকারের অবর্ণনীয় জুলুম নির্যাতনের প্রতিক্রিয়ায় গণবিস্ফোরণের সত্যটি গোপন করে দলীয় লোকদের চাঙ্গা করার চেষ্টা করছেন। সব মিলিয়ে দেশের সাধারণ মানুষকে ভবিষ্যত সম্পর্কে হতাশ করার জন্য শেখ হাসিনার মিথ্যাচার ও কৌশল।

মার্কিন ষড়যন্ত্র বা চক্রান্ত নয়, বরং ছাত্রসমাজের ডাকে সমগ্র জাতি গণবিস্ফোরণে ফেটে পড়েছে, শেখ হাসিনার জগদ্দল পাথর থেকে জাতি মুক্তি পেয়েছে। নতুন প্রজন্ম ১৯৭৪, ১৯৭৫ সালের ইতিহাস জীবন্তভাবে দেখার সুযোগ পেয়েছে। ৫ আগস্ট ২৪ দুপুরে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর ঢাকার রাজপথে জনতার যে ঢল ও উল্লাস তার সাথে তুলনা করার কোনো উপমা খুঁজে পাওয়া যাবে না। রাজপথ ছিল সর্বস্তরের মানুষের আনন্দ মিছিলে লোকে লোকারণ্য, তরঙ্গায়িত। সবার মুখে মুখে এক কথা, দেশ আবার স্বাধীন হয়েছে। জনতার বিজয় উৎসবে শামিল হয়ে মনে হয়েছে, আজকের দৃশ্যটি না দেখলে জীবনে বিরাট অপূর্ণতা থেকে যেত।

মুক্তির এই মিছিল ছাত্রজনতার আন্দোলনের ফসল। এর পেছনে ইন্ধনদাতা আমেরিকা বা কোনো দল, দেশ ছিল না। হ্যাঁ, ইন্ধনদাতা যদি কেউ থাকে, তিনি শেখ হাসিনা। আরো সুনির্দিষ্টভাবে বললে শেখ হাসিনার বিষাক্ত জিহ্বাই তাকে ক্ষমতার মসনদ থেকে টেনে নামিয়েছে এবং ইতিহাসের আস্তাকুড়ে ইন্ডিয়ায় নিক্ষেপ করেছে। অহংকার দম্ভ ও জুলুম আল্লাহ সহেন না, আল্লাহ ছাড় দেন ছেড়ে দেন না, এই আপ্তবাক্যগুলো যে অকাট্য সত্য, তা শেখ হাসিনার ফেরাউনী রাজত্বের অবসানে আবার প্রমাণিত হয়েছে। (চলবে….)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *