বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১

ঘূর্ণিঝড় রেমালের রাতে মোবাইলের আলোয় জন্মালো ২ নবজাতক

ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডব চলছে বাইরে। ঘরে প্রসব বেদনা বেড়েই চলেছে প্রসূতির। নিরুপায় হয়ে স্বজনরা ঝড়ের মধ্যেই প্রসূতিকে নিয়ে আসেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এদিকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হাসপাতাল। প্রসূতির প্রসব যন্ত্রণা বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে চিকিৎসকের মোবাইল ফোনের টর্চের আলোতে পৃথিবীর আলো দেখল দুই নবজাতক। ডাক্তারদের প্রচেষ্টায় সুস্থ আছেন মা ও সন্তানেরা।

সোমবার (২৭শে মে) হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে দুই নবজাতককে পৃথিবীর আলো দেখান ডা. সুমাইয়া ইসলাম।

জানা যায়, হাতিয়া উপজেলার দূরবর্তী ইউনিয়ন চরকিং থেকে রাত ১২টায় হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন ফ্যান্সি বেগম (৩০)। একটি ফুটফুটে কন্যা শিশু জন্মের মাধ্যমে তিনি ৫ম বাচ্চার জন্ম দিয়েছেন ঘূর্ণিঝড় রেমালের রাতে। কিন্তু প্রসবের পর তার প্রসব পরবর্তী রক্তক্ষরণ শুরু হয়।

হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ডা. সুমাইয়া ইসলাম এবং মিডওয়াইফ সাবরিনার আন্তরিক চেষ্টায় মায়ের সুস্থভাবে নরমাল ডেলিভারি করা সম্ভব হয়। সেই সঙ্গে ব্লাড ট্রান্সফিউশন এবং সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে রোগীর শক ও প্রসব পরবর্তী রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে সক্ষম হন তারা।

আরও জানা যায়, দ্বিতীয় রোগী হাতিয়া উপজেলায় নিজ বাসায় ডেলিভারির চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। রোগীর হিমোগ্লোবিন ৬.৫ শতাংশ থাকায় জরুরি ভিত্তিতে সিজার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। পরবর্তী সময়ে ডা. সুমাইয়ার তত্ত্বাবধানে মিডওয়াইফ মিম এবং সাবরিনার সহোযোগিতায় ওই রোগীরও স্বাভাবিক প্রসব করানো সম্ভব হয়। কিন্তু প্রসব পরবর্তীতে তার রক্তক্ষরণ শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে রোগীকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব হয়। বর্তমানে দুই মা ও দুই শিশু সুস্থ আছে।

ডা. সুমাইয়া ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে হাতিয়া উপজেলায় গত ২৬শে মে রাত থেকে বিদ্যুৎ ছিল না। ঘূর্ণিঝড় রেমাল তাণ্ডব চালছিল। প্রসূতি দুইজনের অবস্থাই খারাপ ছিল। সব কিছু মিলিয়ে যে কী অবস্থা পার করেছি আল্লাহ ভালো জানেন। শেষে মোবাইল ফোনের টর্চের আলোর সহায়তায় দুইজন মা ও শিশুর জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ সবাই ভালো আছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *