সোমবার, ডিসেম্বর ২২

ইসরায়েলি নিষেধাজ্ঞায় গাজায় চিকিৎসা ব্যবস্থার চরম বিপর্যয়: জরুরি ওষুধের তীব্র সংকট

|| আন্তর্জাতিক ডেস্ক ||

​গাজায় ইসরায়েলি অবরোধ ও দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের ফলে চিকিৎসা ব্যবস্থা এক ভয়াবহ সংকটের মুখে পড়েছে। রবিবার (২১ ডিসেম্বর) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন সূত্রে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকায় থাকা প্রায় ৫২ শতাংশ ওষুধ এখন সম্পূর্ণ শেষ হয়ে গেছে।

​প্রতিবেদনের মূল পয়েন্টগুলো:

​ওষুধ ও সরঞ্জামের সংকট: প্রয়োজনীয় ওষুধের ৩২১টি আইটেম (৫২%) এবং চিকিৎসা সরঞ্জামের (consumables) ৭১০টি আইটেম (৭১%) বর্তমানে স্টকে নেই। এছাড়া ল্যাবরেটরি ও ব্লাড ব্যাংক সরঞ্জামের সংকট প্রায় ৫৯ শতাংশ।

​বিপন্ন জরুরি সেবা: সবচেয়ে বেশি সংকট দেখা দিয়েছে জরুরি বিভাগে। জীবন রক্ষাকারী অ্যান্টিবায়োটিক, ব্যথানাশক এবং স্যালাইনের অভাবে প্রায় ২ লাখ মানুষ জরুরি সেবা থেকে বঞ্চিত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া কিডনি ডায়ালাইসিস, ক্যান্সার এবং হৃদরোগীদের চিকিৎসাও স্থবির হয়ে পড়েছে।

​সাহায্য সরবরাহে বাধা: গত ১০ অক্টোবর থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী যে পরিমাণ চিকিৎসা সহায়তা প্রবেশ করার কথা ছিল, ইসরায়েল তার ৩০ শতাংশেরও কম প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে।

​মৃত্যু ও মানবিক বিপর্যয়: উন্নত চিকিৎসার জন্য গাজার বাইরে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে ১,৫০০ শিশু। মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নিতে না পারার কারণে ইতিমধ্যে ১২০০ রোগী (যার মধ্যে ১৫৫ জন শিশু) মারা গেছেন।

​বন্দীদের অবস্থা: এদিকে ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া কয়েকজন ফিলিস্তিনিকে গাজার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, বন্দীরা কারাগারে চরম অপুষ্টি এবং নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।

​গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এই মানবিক বিপর্যয় রোধে এবং দ্রুত চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছে দিতে জরুরি হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *